– প্রেস বিজ্ঞপ্তি –
তেঁতুলতলা মাঠটিকে উন্মুক্ত স্থান ঘোষণা ও গেজেট প্রজ্ঞাপন প্রকাশের দাবি জানিয়ে
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর পত্র প্রেরণ
আজ (৬ জুন, ২০২২) তেঁতুলতলা মাঠটিকে উন্মুক্ত স্থান ঘোষণা ও গেজেট প্রজ্ঞাপন প্রকাশে এবং সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট সকল রাষ্ট্রায়ত্ত¡ সংস্থাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানে দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর পত্র প্রেরণ করেছে সুশীল সমাজের ৩৭ ব্যক্তিবর্গ।
উল্লেখ্য তেঁতুলতলা মাঠটি প্রায় ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে এলাকার শিশুরা খেলার মাঠ হিসেবে এবং এলাকার লক্ষাধিক বাসিন্দা ঈদগাহ হিসেবে, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসবের কেন্দ্রস্থল হিসেবে এবং মৃতদেহ গোসল করানোর কাজেও এলাকাবাসী মাঠটি ব্যবহার করে আসছে। এ মাঠটি একটি অর্পিত সম্পত্তি যা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন ছিল। ঢাকা জেলা প্রশাসন কলাবাগান থানা নির্মাণের জন্য অর্পিত এ সম্পত্তি ২৭,৫৪,৪১,৭১০/৯২ টাকার বিনিময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিকট হস্তান্তর করেছে মর্মে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি/এমএন্ডপিআর/৩৩ স্মারকবাহী ২৬ এপ্রিল, ২০২২ তারিখের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে। বিগত ফেব্রæয়ারি মাসে তেঁতুলতলা মাঠে কলাবাগান থানা নির্মাণ করা হবে মর্মে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করে। কলাবাগান থানা কর্তৃপক্ষ এ মাঠে দেয়াল নিমাণের কাজ শুরু করলে জনঅসন্তোষের সৃষ্টি হয় এবং মাঠকে থানা বানানোর অদূরদর্শী ও অসংবেদনশীল প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর লাগাতার কর্মসূচি গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ ও দূরদর্শী সিদ্ধান্তে মাঠটি আপাতত রক্ষা পায়।
১৯৮০ সালে তৎকালীন ঢাকা মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষ থেকে এ জায়গাটি (সিএস দাগ নং ১৯ এবং ২১, এসএ দাগ নং ১০৮ এবং ১১০ মৌজা ধানমন্ডি, ঢাকা) মাঠ হিসেবে সংরক্ষণের প্রস্তাব দেয়া হলে (০৮-১০-১৯৮০ইং) স্থাপত্য অধিদপ্তর, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণণালয়কে জায়গাটি মাঠ হিসেবে সংরক্ষণের অনুরোধ জানায় (৩০-১০-১৯৮০ইং) এ যুক্তিতে যে এ এলাকায় শিশুদের আর কোনো খেলার মাঠ নেই। এরই ধারাবাহিকতায় রাজউক প্রস্তাবিত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (২০১৫-২০৩৫) বিদ্যমান ব্যবহারের প্রতিফলন ঘটিয়ে এবং উন্মুক্ত স্থানের জন্য সরকার অনুমোদিত মানদন্ডের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কলাবাগানের এ জায়গাটিকে প্রকাশিত গেজেটে “উন্মুক্ত স্থান” হিসেবে দেখানো হয়েছে। প্রস্তাবিত এ বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা মন্ত্রীসভা কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জলাশয়, মাঠ, উন্মুক্ত স্থান রক্ষায় ২০০০ সালে একটি আইন প্রণীত হয়েছে যেখানে উন্মুক্ত স্থান বলতে মাস্টার প্ল্যানে উন্মুক্ত স্থান হিসাবে চিহ্নিত বা সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উন্মুক্ত স্থান হিসাবে ঘোষিত এমন স্থান যা দীর্ঘদিন হতে ঈদগাহ বা অন্য কোনভাবে জনসাধারণ কর্তৃক ব্যবহার হয়ে আসছে এমন স্থানকে বুঝানো হয়েছে। গেজেটকৃত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (২০১৫-২০৩৫) অনুযায়ী কলাবাগান অঞ্চলের ২,৬৫,১৮৯ জন বাসিন্দার জন্য বিদ্যমানের অতিরিক্ত আরও ১৩.৯১ একর খেলার মাঠ এবং ১১.৭ একর পার্ক প্রয়োজন। বাস্তবতার নিরিখে মাঠটিকে “উন্মুক্ত স্থান” হিসেবে সংরক্ষণ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তটি আনুষ্ঠানিকভাবে আনা প্রয়োজন বলে স্বাক্ষরকারীরা মনে করে। একইসাথে উন্মুক্ত স্থান হিসেবে মাঠটিকে গেজেট প্রজ্ঞাপণ করাও জরুরী যাতে ২০০০ সালের ৩৬ নম্বর আইন অনুযায়ী এটিকে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। যেহেতু কলাবাগান থানার জন্য অন্যত্র জমি ক্রয় করা হবেই, সেহেতু এ মাঠটি আর পুলিশ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে না রেখে মাঠটির ব্যবস্থাপনা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে প্রদান করা যেতে পারে বলে স্বাক্ষরকারীরা মনে করে। এ মাঠটির সৌন্দর্য বর্ধনে এবং এটিকে ব্যবহার বান্ধব করতে বাংলাদেশ স্থপতি ইন্সটিটিউট বিনা খরচে এর একটি নকশা প্রস্তুত করে দেওয়ার অঙ্গিকার করেছে।
পত্রটিতে স্বাক্ষর দিয়েছেন –
১। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ট্রাস্টি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র; ২। সুলতানা কামাল, মানবাধিকার কর্মী ও সভাপতি , বাপা; ৩। ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, অর্থনীতিবিদ ও নির্বাহী সভাপতি পিপিআরসি; ৪। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক গর্ভনর, বাংলাদেশ ব্যাংক; ৫। খুশী কবির, সমন্বয়কারী, নিজেরা করি; ৬। শাহীন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন; ৭। মেঘনা গুহঠাকুরতা, গবেষক; ৮। ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ; ৯। রাশেদা কে. চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক, গণস্বাক্ষরতা অভিযান; ১০। শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, এএলআরডি; ১১। শিরিন হক, সদস্য, নারীপক্ষ; ১২। অধ্যাপক পারভীন হাসান, উপাচার্য, সেন্ট্রাল উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়; ১৩। সারা হোসেন, আইনজীবী ও অনারারী ডিরেক্টর, বøাস্ট; ১৪। গীতিয়ারা নাসরীন, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ১৫। ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ১৬। ফেরদৌস আজিম, অধ্যাপক, ইংরেজী বিভাগ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়; ১৭। ড. সামিনা লুৎফা, সহযোগী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ১৮। জাকির হোসেন, প্রধান নির্বাহী, নাগরিক উদ্যোগ; ১৯। রেজাউল করিম চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক, কোস্ট; ২০। মোঃ নূর খান লিটন, মানবাধিকার কর্মী; ২১। শারমীন মুরশিদ, মানবাধিকার কর্মী; ২২। গোলাম মনোয়ার কামাল, নির্বাহী পরিচালক, আইন ও সালিশ কেন্দ্র; ২৩। আর্কিটেক্ট মোবাশ্বের হোসেন, সহসভাপতি, বাপা; ২৪। ইকবাল হাবিব, যুগ্মসম্পাদক, বাপা; ২৫। আলমগীর কবির, সমন্বয়ক, গ্রীন ভয়েস; ২৬। জামশেদ আনোয়ার তপন, সহসভাপতি, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদ; ২৭। মালেকা বানু, সহসভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ; ২৮। সংগীতা ইমাম, সহসাধারণ সম্পাদক, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী; ২৯। তাসাফি হোসেন, প্রতিষ্ঠাতা, বহ্নিশিখা; ৩০। ড. শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী ; ৩১। রেহনুমা আহমেদ, লেখক; ৩২। অরূপ রাহী, সঙ্গীতশিল্পী, লেখক; ৩৩। নবনীতা চৌধুরী, উন্নয়ন কর্মী, গায়ক; ৩৪। মাহমুদ রহমান, আলোক চিত্রী, ম্যাপ-ফটো; ৩৫। ড. সায়দিয়া গুলরুখ, সাংবাদিক ; ৩৬। আহসান রনি, প্রতিষ্ঠাতা, গ্রীন সেইভার্স; ৩৭। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
বার্তা প্রেরক –
আসাদুল্লাহ আল গালিব
ল’ইয়ার, বেলা।
মোবাইল: ০১৫২১৪৯৪২৬৯
৬ জুন, ২০২২