আজ (৬ মে, ২০২১) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফরমস এ্যান্ড ডেভেলাপমেন্ট (এএলআরডি), নিজেরা করি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (বøাস্ট), বাংলােেদশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আইন ও শালিস কেন্দ্র (আসক), এবং স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য বিনষ্ট করণ হতে বিরত থাকতে, এ উদ্যানের শতবর্ষী ও বিলুপ্তপ্রায় পাখিদের আশ্রয়স্থল বৃক্ষগুলোকে না কাটতে এবং ইতোমধ্যে কর্তন করা বৃক্ষগুলোর জায়গায় একই প্রজাতির ৩ গুণ বৃক্ষ রোপণের দাবী জানিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেছে। সংগঠনসমূহ উল্লেখিত দাবির পাশাপাশি স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে মূলরুপে রক্ষারও দাবী জানিয়েছে।
সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ”সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩ য় পর্যায়)” শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গণপ‚র্ত অধিদপ্তর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিদ্যমান বেশকিছু শতবর্ষী বৃক্ষ কেটে ফেলছে। শতবর্ষী এ বৃক্ষসমূহ বিলুপ্ত প্রায় পাখির আবাস্থল। যদিও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গৃহীত মহাপরিকল্পনা বান্তবায়নে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কিছু গাছ কর্তন করা হলেও প্রায় ১০০০ (এক হাজার) গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু পুরানো শতবর্ষী বৃক্ষ নিধন করে লাগানো নতুন গাছ কখনোই উদ্যানের পরিবেশ রক্ষায় একই ভূমিকা পালন করবেনা, ফলে পুরানো এবং বিলুপ্তপ্রায় পাখির আশ্রয়স্থল ও আবাসের স্থান ধ্বংস করে বায়ু দূষণের শীর্ষে থাকা মহানগরীকে আরো নাজুক অবস্থায় ফেলা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অধিকন্তু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পিত এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। উপরন্তু উদ্যানের সবুজকে ধ্বংস করা প্রকারান্তরে উদ্যানকে ধ্বংস করার ও তার শ্রেণি পরিবর্তনের শামিল যা ২০০০ সালের ৩৬ নং আইনের (জলাধার সংরক্ষণ আইন) পরিপন্থী। একই আইন অনুযায়ী উদ্যান হিসেবে চিহ্নিত ও ব্যবহৃত কোন ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য হস্তান্তরও করা যাবে না। তাছাড়া উদ্যানের সবুজ ধ্বংস করে এহেন নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে এ উদ্যানকে রক্ষায় বেলা কর্তৃক দায়েরকৃত একটি রীট মামলায় (নং ১৮৫৯/ ২০০৮) মহামান্য হাইকোর্ট প্রদত্ত রায়ের পরিপন্থী।
আইন ও আদালতের রায়ের সঠিক প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত কওে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অটুট রাখতে ও এ উদ্যানের শতবর্ষী বৃক্ষসমূহ রক্ষার্থে সংগঠনসমূহ এ নোটিশ প্রেরণ করে। যাদের বরাবর নোটিশ প্রেরিত হয়েছে- মেয়র, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন; সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়; সচিব
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়; সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; প্রধান বন সংরক্ষক; চেয়ারম্যান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর; প্রধান প্রকৌশলী, গণপূর্ত অধিদপ্তর।
বার্তা প্রেরক
সাঈদ আহমেদ কবীর
এ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট
সমন্বয়কারী-আইন, বেলা।
মোবাইল: ০১৭১১২০৮০৮১