দেশের বিরল প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সাম্বার হরিণ। একসময় দেশের সব পাহাড়ি বনাঞ্চলে ও সিলেটের বিভিন্ন বনে সাম্বারের উপস্থিতি থাকলেও বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের কতিপয় বন ছাড়া এ প্রাণী আর কোথাও তেমন দেখা যায় না। আইইউসিএন এর তথ্য অনুযায়ী এশীয় বনাঞ্চলে এটি সংকটাপন্ন হলেও বাংলাদেশে সাম্বার মহাবিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিরল ও হরিণ প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় আকৃতির সাম্বার হরিণের অস্তিত্ব সংকটের কারণ সম্বল্বিত সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, চামড়ার বাণিজ্যিক চাহিদা থাকায় প্রতিনিয়ত চোরা শিকারিদের কবলে পড়ছে এ বন্যপ্রাণীটি। আকারে বড় হওয়ায় শিকারিদের পছন্দের তালিকায় এটি রয়েছে শীর্ষে। সাম্বার গহিন বনের বাসিন্দা বিধায় বন ধ্বংসের কারণে বাসস্থানের সংকটেও এ প্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, সাম্বার হরিণ শিকার বর্তমানে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে উঠেছে। ইতোপূর্বে ২০২১ সালের ১০ মে রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার দুর্গম লুলাংছড়ি গ্রাম থেকে একটি সাম্বার হরিণ শাবক উদ্ধার করে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ। পরবর্তীতে হরিণটি বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে স্থানান্তর করে বন বিভাগ। ২০২৪ সালের ৭ মার্চ রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার ভাসান্যদম ইউনিয়নে একজন শিকারি সাম্বার হরিণ ধরে মাংস বিক্রির জন্য জবাই করেন। সর্বশেষ ২৭ জুন, ২০২৫ কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদী থেকে উদ্ধারকৃত একটি সাম্বার হরিণ মারা যায়।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ ও কঠোর পদক্ষেপের অভাবে সাম্বার হরিণসহ মূল্যবান প্রাণী শিকারের ঘটনা প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে না। বিপদাপন্ন, বিপন্ন ও বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা বন্যপ্রাণী শিকারের সাথে জড়িত দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যর্থতা একই বিষয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসিনতার পরিচায়ক।
উপরোক্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এর পক্ষ থেকে অত্র পত্রের মাধ্যমে মহাবিপন্ন প্রাণীর তালিকাভুক্ত সাম্বার হরিণসহ সকল বিপদাপন্ন, বিপন্ন ও বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে। একইসাথে সাম্বার হরিণ শিকারের সাথে জড়িত দোষী ব্যক্তিদের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছে। সেইসাথে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে তদারকি ব্যবস্থা জোরদারকরণের অনুরোধ জানাচ্ছে।
আরও তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন-
এস. হাসানুল বান্না
এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট
ও আইনজীবী, বেলা।
মোবাইলঃ ০১৮৩৩০২৬২৬২