-প্রেস বিজ্ঞপ্তি-
রংপুরের “শালমারা” নদীকে বদ্ধ জলমহাল দেখিয়ে দেয়া ইজারা বাতিলের দাবিতে বেলা‘র লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ
আজ (১৮ ফেব্রæয়ারি, ২০২৫) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর পক্ষ থেকে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ এলাকা দিয়ে প্রবাহিত “শালমারা” নদী রক্ষায় একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে। বেলা কর্তৃক প্রেরিত এ নোটিশে উল্লেখিত নদীর যথাযথ সংস্কারপূর্বক সিএস ম্যাপ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করে নদীটির মূল প্রবাহ ফিরিয়ে আনার জোরালো দাবি জানানো হয়েছে। একইসাথে এ নদীকে বদ্ধ জলমহাল দেখিয়ে প্রদানকৃত ইজারা বাতিলের এবং নদীকে বদ্ধ জলমহাল দেখিয়ে নদীর শ্রেণি পরিবর্তনের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জবাবদিহীতার আওতায় এনে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেইসাথে স¤প্রতি আদালতের আদেশে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কর্তৃক দেশের নদীর যে তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, সেখানে “শালমারা” নদীকে অন্তর্ভুক্ত করে এর যথাযথ সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়েছে এ নোটিশের মাধ্যমে।
চিঠিটি পাঠানো হয়েছে- সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, সচিব, ভ‚মি মন্ত্রণালয়, সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, চেয়ারম্যান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিভাগীয় কমিশনার রংপুর।
উল্লেখ্য, রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ এলাকা দিয়ে “শালমারা” নামক একটি নদী প্রবাহিত রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এ নদী একই উপজেলার ঘাঘট নদ থেকে উৎপন্ন হয়ে একই উপজেলায় ভাংনি ইউনিয়নের কাশীনাথপুর গ্রামে কাফ্রিখাল নদের সাথে মিলিত হয়েছে। এ নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ স্থানবিশেষে প্রায় ১০০ মিটার। স্থানীয়ভাবে নদীটি ভাটিতে চমকা নামেও পরিচিত। সিএস ম্যাপে শালমারা নদী হিসেবে চিহ্নিত থাকলেও এ নদীকে বদ্ধ জলমহাল দেখিয়ে নদীর প্রায় ৫১ একর জমি ভিন্ন-ভিন্ন নামে ইজারা দেয়া হয়েছে। পায়রাবন্দ ইউনিয়নে নদীটিকে ‘শালমারা বিল’ নামে ৩৯ একর ৪০ শতক, বড় হযরতপুর ইউনিয়নে ‘শাল রিভার ছোট’ নামে ৪ একর ২০ শতক এবং ভাংনি ইউনিয়নে ‘বুড়াইল নদী’ নামে ১১ একর ৬৪ শতক ইজারা দেয়া হয়েছে। এর ফলে, প্রকৃত মৎস্যজীবী এ নদীতে মাছ ধরতে পারছে না ও কৃষক এ নদীর পানি ব্যবহার করে কৃষি কাজ সম্পন্ন করতে পারছে না। ইতোমধ্যে এলাকাবাসী এসব ইজারার বিরুদ্ধে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করলেও নদী পুনরুদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
দেশে প্রচলিত আইনে নদীকে জলাধার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জমি ভরাট বা শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। অধিকন্তু দেশের সকল নদীকে মহামান্য আদালত আইনী সত্তা/জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করে ও জনগণের ন্যাস সম্পত্তি আখ্যা দিয়ে রায় প্রদান করেছেন। আদালতের রায় অনুযায়ী জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কর্তৃক অন্যান্য নোটিশ গ্রহীতার সহযোগীতায় দেশের সকল নদ-নদী দখলমুক্ত করে এর সুরক্ষা, সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইনী বিধান লঙ্ঘন করে ও আদালতের নির্দেশের ব্যতয় ঘটিয়ে “শালমারা” নদীকে বদ্ধ জলমহাল হিসেবে ইজারা প্রদানের বিরুদ্ধে বেলা উল্লেখিত নোটিশ প্রেরণ করেছে।
আরও তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন-
এস. হাসানুল বান্না
এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট
ও আইনজীবী, বেলা।
মোবাইলঃ ০১৮৩৩০২৬২৬২
১৮-০২-২০২৫ ইং