-প্রেস বিজ্ঞপ্তি-
ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলাধীন ”বিল” শ্রেণিভুক্ত ভূমিকে “পতিত” হিসেবে পরিবর্তন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়া নামক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে বন্দোবস্তের উপর প্রদত্ত হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা আদেশ বহাল রেখেছেন আপীল বিভাগ
আজ (২৩ মে, ২০২২) ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলাধীন ”বিল” শ্রেণিভুক্ত ভূমিকে ”পতিত” হিসেবে পরিবর্তন ও ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়া নামক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে বন্দোবস্ত প্রদানের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ ও রুল বহাল রেখেছেন মহামান্য আপীল বিভাগ।
ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলাধীন ৪.২৩ একর ”বিল” শ্রেণিভুক্ত ভূমিকে ”পতিত” হিসেবে পরিবর্তন এবং উল্লেখিত ”বিল” শ্রেণীর ভূমি ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়া নামক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে বন্দোবস্ত প্রদানের বিরুদ্ধে বেলা মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে একটি জনস্বার্থমূলক মামলা (নং- ১০৪১৭/২০২১) দায়ের করে। মামলার প্রাথমিক শুনানী শেষে বিগত ১২ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে জনাব বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও জনাব বিচারপতি মোঃ কামরুল হোসেন মোল্লা-এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলাধীন ৪.২৩ একর ”বিল” শ্রেণিভুক্ত ভূমিকে ”পতিত” হিসেবে পরিবর্তন এবং উল্লেখিত ”বিল” শ্রেণীর ভূমি ১১ নং বিবাদীর (রেজিস্ট্রার, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়া) অনুকূলে বন্দোবস্ত প্রদানের কার্যক্রম কেন সংবিধানবিরোধী, বেআইনী, এবং অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ঘোষণা করা হবেনা তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। একইসাথে বৃহত্তর জনস্বার্থে ভূমিটির পূর্বের রেকর্ড ফিরিয়ে আনা ও সংরক্ষণ করার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবেনা তাও জানতে চেয়ে বিবদীগণের উপর রুল জারি করেন মহামান্য হাইকোর্ট। সেইসাথে, বিবাদীগণ (জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার, বিজয়নগর) কর্তৃক উল্লেখিত “বিল” শ্রেণীর ভূমি রেজিস্ট্রার, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়া (১১ নং বিবাদী) অনুকূলে বন্দোবস্তের সকল কার্যক্রমের উপর ৩ (তিন) মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেন মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ।
হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত ১২ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখের আদেশ স্থগিত চেয়ে ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়া কর্তৃপক্ষ এবং রাষ্ট্রপক্ষ আলাদাভাবে দু‘টি সিভিল পিটিশন (নং ২৪৩/২০২২ ও ৪৫৩/২০২২) দাখিল করে। সিভিল পিটিশন দুইটির শুনানী শেষে বিগত ২৫ জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে চেম্বার জজ হাইকোর্ট বিভাগের প্রদত্ত ১২ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখের আদেশ স্থগিত করেন। জেম্বার জজের এ স্থগিত আদেশের বিরুদ্ধে বেলা আবেদন করলে জনাব বিচারপতি নুরুজ্জামান, জনাব বিচারপতি বোরহান উদ্দীন ও জনাব বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ এর সমন্বয়ে গঠিত মহামান্য আপীল বিভাগ আজ (২৩ মে, ২০২২) সিভিল পিটিশন দুইটি খারিজ করেন। ফলশ্রæতিতে ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলাধীন ৪.২৩ একর ”বিল” শ্রেণিভুক্ত ভূমিকে ”পতিত” হিসেবে পরিবর্তন এবং উল্লেখিত ”বিল” শ্রেণীর ভূমি ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়া নামক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে বন্দোবস্ত প্রদানের সকল কার্যক্রম স্থগিত সংক্রান্ত হইকোর্টের আদেশ বহাল রইল।
উল্লেখ্য, ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলাধীন ৭৬ নং চর রাজাবাড়ি মৌজাস্থিত ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত সি.এস ও এস.এ ৯৩৬ এবং বি.এস ৩২৭১ নম্বর দাগে ৪.২৩ একর ভূমি “বিল” হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক, ব্রাক্ষণবাড়িয়া নামে রেকর্ডভুক্ত রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বিজয়নগর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া উল্লেখিত “বিল” শ্রেণিভুক্ত ভূমি অকৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালার আলোকে শ্রেণি পরিবর্তনক্রমে স্থানীয় সংসদ সদস্য কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়ার এর অনুকূলে বন্দোবস্ত প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসক, ব্রাক্ষণবাড়িয়া বরাবর প্রস্তাব প্রেরণ করে। পরবর্তীতে শ্রেণি পরিবর্তন সংক্রান্ত বিবিধ মোকাদ্দমা নং ১৫/২০২০-২০২১ মূলে উল্লেখিত ভূমির শ্রেণি ”বিল” হতে “পতিত” হিসেবে পরিবর্তন করে রেকর্ড সংশোধন করা হয়। শ্রেণি পরিবর্তনকৃত উক্ত ভূমি নাম মাত্র মূল্যে ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়ার এর অনুকূলে দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসক, ব্রাক্ষণবাড়িয়া ভ‚মি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রস্তাব প্রেরণ করে। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিল জলাধারের অন্তুর্ভুক্ত যার শ্রেণি পরিবর্তন করার কোন সুযোগ নেই। এমতাবস্থায় বিলটি রক্ষার নিমিত্তে বেলা উল্লেখিত জনস্বার্থমূলক মামলাটি দায়ের করে।
বেলা‘র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট বাকির উদ্দিন ভুঁইয়া এবং রাষ্টপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
মামলার বিবাদীগণ- ১। সচিব, ভ‚মি মন্ত্রণালয়; ২। সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; ৩। চেয়ারম্যান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন; ৪। মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর; ৫। মহাপরিচালক, ভূমি জরিপ ও রেকর্ড অধিদপ্তর; ৬। জেলা প্রশাসক, ব্রাক্ষণবাড়িয়া; ৭। পুলিশ সুপার, ব্রাক্ষণবাড়িয়া; ৮। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বিজয়নগর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া; ৯। উপপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর (ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়); ১০। সহকারী কমিশনার (ভূমি), বিজয়নগর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া; ১১। রেজিস্ট্রার, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়া।
আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন –
হাসানুল বান্না
আইনজীবী, বেলা।
মোবাইল: ০১৮৩৩০২৬২৬২
তারিখঃ ২৩ মে, ২০২২