-প্রেস রিলিস-
আজ (৩১ জুলাই, ২০২৫), নদীর বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্য শৃঙ্খল টিকিয়ে রাখতে অগ্রণি ভূমিকা বহনকারী শুশুকসহ সকল প্রজাতির প্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সংশ্লিষ্ট করতিপক্ষ বরাবর পত্র প্রেরণ করেছে। একইসাথে, বেলা সম্প্রতি শুশুক শিকার ও বিক্রির সাথে জড়িত দোষী ব্যক্তিদের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছে। সেইসাথে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে কঠোর ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে বেলা।
সম্প্রতি দেশের জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী গত ২৯ জুলাই, ২০২৫ এ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে প্রায় এক মণ ওজনের একটি শুশুক ধরা পড়ে। খাদ্য হিসেবে শুশুকের চাহিদা না থাকা সত্তে¡ও শুধুমাত্র এর তেল দিয়ে বড়শিতে মাছ ধরার জন্য শুশুকটি নদীতে তাৎক্ষনিক ছেড়ে না দিয়ে আটক করা হয় পরবর্তীতে দৌলতদিয়া ঘাটে মাত্র ৭০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
উল্লেখ্য যে, বিশ্বে বর্তমানে শুশুক প্রজাতি বিপন্নের পথে। আইইউসিএন এর তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে বিদ্যমান শুশুকের এক-তৃতীয়াংশই বাংলাদেশে রয়েছে যার মধ্যে সুন্দরবনে প্রায় ২২৫টি, পদ্মা-যমুনায় প্রায় ২০০টি। কর্ণফুলী, সাঙ্গু, রূপসা, সুরমা, হালদাসহ অন্যান্য নদীতে রয়েছে ৫০০টি। জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে শুশুকের গুরুত্ব অপরিসীম। শুশুকের খাদ্য হিসেবে অসুস্থ ও দুর্বল প্রজাতির মাছ গ্রহণ জলজ পরিবেশের সুস্থতা ঠিক থাকে। ফলশ্রæতিতে মাছসহ কাছিম, ভোঁদড় ও ঘড়িয়ালের মতো জলজ প্রাণী সুরক্ষিত থাকে।
দুখের বিষয় হচ্ছে বিভিন্ন কারণে শুশুকের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। মৃত শুশুক ভেসে এসে তীরে পড়ে থাকার খবর প্রায় প্রচার হয় দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। শুশুক বিপন্নের কারণ হিসেবে অবৈধভাবে মাছ ধরা, কারেন্ট জালের ব্যবহার, আবাসস্থল ধ্বংস, পানি দূষণ, বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার, অতি মাত্রায় নৌযান চলাচল, জাহাজের প্রপেলরের সঙ্গে সংঘর্ষ ইত্যাদি বিষয়কে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে গবেষকদের মতে, শুশুক মারা যাওয়ার জন্য কারেন্ট জালের ব্যবহার ৮৭ শতাংশ দায়ী। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রান্তিক অঞ্চলে ডলফিন শিকার করা হয় তেল ও ওষুধ তৈরির জন্য।
দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ডলফিন বা শুশুক শিকার, পরিবহন এবং বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের যথাযথ ও কঠোর পদক্ষেপের অভাবে এবং বিপন্ন প্রাণী শিকারের সাথে জড়িত দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যর্থতায় একই বিষয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসিনতার পরিচায়ক।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংক্রান্ত আইন যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিতকরণ লক্ষ্যেই মূলত আজ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কতৃর্ক উল্লেখিত নোটিশটি প্রেরণ করা হয়েছে।
পত্রটি যাদের বরাবর পাঠানো হয়েছে – পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বন বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক এবং বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা।
Chattogram Office
Monira Parvin
Field Facilitator, BELA Chattogram
House no: D-3, Road no:8 Block: A, Chandgoan R/A, Chattogram
Monira: 01715673936