আজ (২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪) ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত “বংশী” (আইডি নং: ঘঈ-৪০, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড) নদী রক্ষায় আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন চেয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব; পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব; ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব; জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান;, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক; ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার; পরিবেশ অধিদপ্তর (ঢাকা জেলা কার্যালয়)-এর উপ পরিচালক; সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ঢাকা রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক বরাবর একটি প্রেরণ করেছে।
প্রেরিত এ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে বেলা বিগত ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে বংশী নদীর রক্ষায় মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে একটি জনস্বার্থমূলক মামলা (নং ১৫৫৪১/২০২৩) দায়ের করে। মামলার প্রাথমিক শুনানী শেষে বিগত ০২ জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক, সাভার উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালককে আইন অনুযায়ী তদন্তপূর্বক বংশী নদীতে বিদ্যমান দখলদার এবং দূষণকারীর পূর্ণাঙ্গ তালিকাসহ ৩ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন প্রস্তুতের নির্দেশ প্রদান করেন। একইসাথে আদালত সাভার পৌরসভার প্রশাসক এবং ঢাকা রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকার নির্বাহী পরিচালককে এ নদীতে অনতিবিলম্বে পৌরবর্জ্য ও শিল্পবর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে নির্দেশ প্রদান করেন। উল্লেখিত নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়ন সম্পর্কিত প্রতিবেদন আদেশ প্রাপ্তির ৩ মাসের মধ্যে আদালতে দাখিলের জন্য বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন মহামান্য আদালত।
অন্তবর্তীকালীন এ আদেশের পাশাপাশি মহামান্য আদালত দখল ও দূষণ থেকে বংশী নদী রক্ষায় বিবাদীগণের ব্যর্থতা সংবিধান ও প্রযোজ্য আইনের পরিপন্থি হওয়ায় কেন তা আইন বহির্ভূত, বেআইনী ও জনস্বার্থ বিরোধী ঘোষণা করা হবেনা তা জানতে চেয়ে বিবাদীগণের উপর রুল জারি করেছেন। রুলে আদালত আরও জানতে চেয়েছেন যে, বংশী নদীকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ধারা ৫ অনুযায়ী প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা ও সেই মোতাবেক ব্যবস্থাপনার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না। সিএস/আর এস জরিপ এবং মূল প্রবাহ অনুযায়ী নদীটির সীমানা নির্ধারণ, নদী সীমানায় বিদ্যমান সকল দখলদারদের উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নদীকে রক্ষার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
এ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে মামলার আদেশ প্রদানের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও আদালতের আদেশ অনুযায়ী প্রস্তত করা হয়নি দখলদার ও দূষণকারীর পূণাঙ্গ তালিকা। সম্প্রতি বেলার একটি টীম কর্তৃক বংশী নদীর নামাবাজার এলাকা পরিদর্শনে নদী দখল করে নির্মিত স্থাপনা পরিলক্ষিত হয় মর্মে পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও সাভার পৌরসভার ভাগলপুর এলাকায় মনুমিয়ার ঘাটে নদী দখল করে “শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম” নির্মাণ এবং নদীতে পৌরবর্জ্য ও শিল্পবর্জ্য ফেলা বন্ধের নির্দেশ থাকলেও সম্প্রতি পরিদর্শনে এ নদীর বিভিন্ন স্থানে বর্জ্যের ভাগার লক্ষ্য করা গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রেরিত এ পত্রে।
প্রেরিত এ পত্রে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত বংশী নদীতে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তদন্তপূর্বক শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামসহ বিদ্যমান সকল দখলদারদের এবং এ নদী দূষণকারীর পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুতপূর্বক অনতিবিলম্বে দখল উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে। একইসাথে সাভার পৌরসভার ভাগলপুর এলাকায় মনুমিয়ার ঘাটে নদী দখল করে নির্মিত “শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম” উচ্ছেদপূর্বক নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। সেইসাথে এ নদীতে পৌরবর্জ্য ও শিল্পবর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানিয়েছে। প্রেরিত এ পত্রে বংশী নদীকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ধারা ৫ অনুযায়ী প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা ও সেই মোতাবেক ব্যবস্থাপনার এবং সিএস/আর এস জরিপ ও মূল প্রবাহ অনুযায়ী নদীটির সীমানা নির্ধারণ করে যথাযথ সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়েছে।
আরও তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন-
এস. হাসানুল বান্না
আইনজীবী, বেলা
মোবাইলঃ ০১৮৩৩০২৬২৬২
২২-০৯-২০২৪ ইং