আজ (৩১ মার্চ, ২০২৪) কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জর দোছড়ি বন বিটের কর্মকর্তা সাজাদুজ্জামান এর নির্মম অপহত্যায় জড়িতদের অতিসত্বর আইনের আওয়ায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী জানিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধগণ প্রধান বন সংরক্ষক বরাবর একটি পত্র প্রেরণ করেছেন।
প্রেরিত এ পত্রে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধগণ উল্লেখ করেন, আজ ৩১ মার্চ, ২০২৪ দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জর দোছড়ি বন বিটের কর্মকর্তা সাজাদুজ্জামান এর নির্মম মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ৩১ মার্চ, ২০২৪ তারিখে প্রয়াত সাজাদুজ্জামান ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জ এর আওতাভুক্ত রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় বনের জমি রক্ষা করতে গিয়ে ভূমি দস্যুদের নির্মমতার শিকার হন। উখিয়া রেঞ্জ এর হরিণমারা অংশ থেকে পাহাড় কেটে বালু সরবরাহ করার সময় একটি মিনি ট্রাক (ডাম্পার) সাজাদুজ্জামান কে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। এ ঘটনায় আহত হন আরো একজন বন কর্মকর্তা।
কতিপয় দুর্বৃত্ত, ভূমি দস্যু, পাহাড় ও বনখেকোর আগ্রাসনে প্রায় নি:শেষিত জাতীয় বনভূমির রক্ষায় সাংবিধানিক প্রতিশ্রæতি অনুয়ায়ী দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নির্মম আক্রমণের শিকার হন এ বনকর্মকর্তা। যা তাঁর মাত্র ৮ (আট) মাস বয়সের সন্তানকে করেছে অভিভাবকহীন। প্রেরিত পত্রে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ সাজাদুজ্জামানের অপহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ও তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার ও সহকর্মীদের আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন ।
প্রেরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত ০৭ আগষ্ট, ২০২০ মো: ইউসুফ উদ্দীন নামক মহেশখালী বন রেঞ্জ কর্মকর্তা পাহাড় ও বনখেকোর হাতে অপহত্যার শিকার হয়েছিল। সেঘটনারও সঠিক ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি। পাহাড় ও বনখেকোদের দমন করতে না পারার ক্রমাগত ব্যর্থতা এসব অপরাধীকে দুর্র্ধষ ও বেপরোয়া করে চলেছে যারই ধারাবাহিকতায় মোঃ ইউসুফ এর পর সাজাদুজ্জামানকে আবারও অপহত্যার শিকার হতে হলো।
প্রেরিত পত্রে এ নির্মম ঘটনার সাথে জড়িতদের অতিসত্বর গ্রেফতার করে আইনের আওয়ায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবী জানায়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ। একইসাথে তাঁরা প্রয়াত মোঃ ইউসুফ ও সাজাদুজ্জামানের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং আহত বন কর্মকর্তার চিকিৎসা প্রদানের দাবী জানিয়েছেন। সেইসাথে বনভূমি সুরক্ষায় ভূমিদস্যুদের বাড়তি ঝুঁকিতে থাকা কর্মীদের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানানোসহ দেশের বনভূমি রক্ষায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রতিশ্রæতি প্রদান করেছেন তাঁরা।
পত্রটিতে স্বাক্ষর করেছেন-
১. সুলতানা কামাল, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন;
২. খুশী কবির, সমন্বয়কারী, নিজেরা করি;
৩. শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি);
৪. ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি);
৫. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান নির্বাহী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা)
৬. আলমগীর কবির, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা);
৭. অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার, বিভাগীয় প্রধান, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ও ডিন, বিজ্ঞান অনুষদ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ;
আরও তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন-
আদিল আজমাইন নাকিব
কমিউনিকেশন অফিসার, বেলা
০১৬২৩৬০৭৯৪৩