– প্রেস বিজ্ঞপ্তি –
মৌলভীবাজারের বর্ষিজোড়া ইকো পার্কে পৌরসভা মেয়র কর্তৃক পৌরবর্জ্য ফেলার উপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা
আজ ২৮ এপ্রিল, ২০২২ মহামান্য হাইকোর্ট মৌলভীবাজার জেলাস্থ সদর উপজেলাধীন লাউরাগা রিজার্ভ ফরেস্ট মৌজায় অবস্থিত ৮৮৬ একর আয়তনের বর্ষিজোড়া ইকো পার্ককে অবৈধ গাছকাটা, পাহাড় কাটা, রাস্তা নির্মাণ ও বর্জ্য ডাম্পিং থেকে রক্ষা ও সংরক্ষণে বিবাদীদের ব্যর্থতাকে কেন অবৈধ, আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত এবং জনস্বার্থ বিরোধী ঘোষনা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। সেই সাথে ইকো পার্কটিকে ধ্বংসের জন্য মেয়র, মৌলভীবাজার পৌরসভা ( ৮ নং বিবাদী) এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ আদায় এবং জনস¦ার্থে পার্কটিকে সংরক্ষণে বিবাদীদের প্রতি কেন নির্দেশ দেয়া হবেনা তাও জানতে চেয়েছেন মহামান্য আদালত। একই সাথে মৌলভীবাজার পৌরসভা কর্তৃক ইকো পার্কে ময়লা ফেলার উপর ৬ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন আদালত।
জনাব বিচারপতি জে. বি. এম হাসান ও জনাব বিচারপতি রাজিক-আল-জালিল-এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক দায়েরকৃত এক জনস্বার্থমূলক মামলার (নং- ১২২৪৪ /২০২১) প্রাথমিক শুনানী অন্তে উল্লেখিত রুল ও আদেশ জারি করেন।
উল্লেখ, মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলায় লাউরাগা রিজার্ভ ফরেস্ট মৌজায় বর্ষিজোড়া সংরক্ষিত বন অবস্থিত। এর মোট আয়তন ৮৮৬ একর। ১৯১৬ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে উক্ত বনকে সংরক্ষিত বন ঘোষণা করেন। সম্প্রতি ইকো পার্কের জায়গায় মৌলভীবাজার পৌরসভা কর্তৃক ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে মর্মে দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এছাড়া আবর্জনা পরিবহণের সুবিধার্থে রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য মৌলভীবাজার স্টেডিয়াম সংলগ্ন বনের টিলা কেটে মাটি সরানো হয়েছে। শহরের ময়লা আবর্জনা ও প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলার কারণে বনের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে ও দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে যা বন, বন্যপ্রাণীসহ পশুপাখি এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িঁয়েছে। বন বিভাগের লিখিত আপত্তি সত্তে¡ও বনের জায়গায় পৌরসভার মেয়র কর্তৃক বেআইনিভাবে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা এক ধরণের জবরদখলের শামিল। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সকল প্রকার ময়লা আবর্জনা ও প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ করে বর্জ্য ডাম্পিং কার্যক্রম বন্ধ, টিলা কাটা বন্ধ ও কাটা অংশে দেশীয় প্রজাতির বৃক্ষ দ্বারা বনায়ন করতে এবং উক্ত পরিবেশ বিরোধী কাজের জন্য ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবি জানিয়ে জনস্বার্থমূলক মামলাটি দায়ের করে।
বেলা’র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার মোঃ আশরাফ আলী । রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জনাব তুষার কান্তি রায়।
মামলার বিবাদীগণ- ১। সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; ২। প্রধান বন সংরক্ষক, বন বিভাগ; ৩। মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর; ৪। জেলা প্রশাসক, মৌলভীবাজার; ৫। পুলিশ সুপার, মৌলভীবাজার; ৬। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, মৌলভীবাজার; ৭। পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়; ৮। মেয়র, মৌলভীবাজার পৌরসভা; ৯। সহকারী পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার; ১০। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর উপজেলা, মৌলভীবাজার ।
আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন –
এস. হাসানুল বান্না
আইনজীবী, বেলা।
মোবাইল: ০১৮৩৩০২৬২৬২
তারিখঃ ২৮ এপ্রিল, ২০২২